আল্লাহর জন্য পশু উৎসর্গ দেওয়াকে কোরবানি বলে। কোরবানি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ ইবাদত। আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি করতে উৎসাহ দিয়েছেন। যারা সামর্থ্যবান তাদের জন্য ওয়াজিব। আর যারা করবেনা, তাদের রাসুল (সা.) ভর্ৎসনা করেছেন।
কোরবানির সূচনা হয় আদিপিতা হজরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের মাধ্যমে। তার ছেলে হাবিল ও কাবিল পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোরবানি দিয়েছিল। হাবিলের ইখলাস ও নিষ্ঠা ছিল, তিনি সত্যের ওপর ছিলেন। তাই তার কোরবানি গৃহীত হয়েছিল। কাবিল ছিল অসত্যের ওপর। তাই তার কোরবানি কবুল হয়নি।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাদের আদমের দুই পুত্রের কাহিনি শুনিয়ে দিন, যখন তারা উভয়ে কোরবানি করল, একজনের কোরবানি কবুল হলো, অপরজনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা আল মায়েদা, আয়াত : ২৭)
কোরবানির পশু শোয়ানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে, শোয়ানোর পর পশু যেন কিবলামুখী হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পশ্চিম দিকে যেহেতু বাংলাদেশের কিবলা সেই হিসেবে পশ্চিম দিকে যাতে পশুর মুখ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
অর্থাৎ, পশুকে বাঁ-পাজরের ওপর, দক্ষিণ দিকে মাথা দিয়ে কিবলামুখী করে শোয়াতে হবে। এভাবেই পশুকে শোয়ানো উত্তম। পশুটিকে এমনভাবে ধরতে বা বেঁধে নিতে হবে যেন জবাইয়ের সময় সে পাগুলো বারবার ছুড়তে না পারে।
পশু জবেহ করার নিয়ম
১. জবাই করার আগে পশুকে ঘাস, পানি ইত্যাদি ভালোভাবে খাওয়াতে হবে। কোরবানির প্রাণীকে ক্ষুধার্থ বা পিপাসার্ত রাখা অন্যায়।
২. পশুকে কোরবানি করার স্থানে টেনে-হিঁচড়ে নেওয়া অন্যায়।
৩. জবেহ করার জন্য পশুকে কঠোরভাবে শোয়াবে না।
৪. কিবলার দিকে ফিরিয়ে বাঁ পাশের ওপর শোয়াতে হবে।
৫. পশুর চার পায়ের মধ্যে তিনটি বাঁধবে।
৬. আগে থেকেই ছুরি ধার দিয়ে রাখবে। ভোঁতা ছুরি দিয়ে জবেহ করবে না।
৭. কোরবানির পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধারানো অন্যায়। বরং আগেই ধার দিয়ে রাখতে হবে (ফতোয়ায়ে রহিমিয়া, ১/৯৮)
৮. এমনভাবে জবেহ করা যাবে না, যার ফলে গলা পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়।
৯. জবেহ করার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে।
১০. একটি পশুকে আরেকটি পশুর সামনে জবাই করবে না।
১১. পশুর প্রাণ বের হওয়ার আগে চামড়া খসানো যাবে না। (জাওয়াহিরুল ফিকহ : ২/২৭৩)
খুলনা গেজেট/এএজে